বাড়ির পাশের ছোট্ট বাগানে অনেক রকম ফুল ফুটে আছে। কদিন যাবৎ আরও বেশি বেশি যত্ন নিচ্ছি বাগানটার। কাল আমার বান্ধবী সেঁজুতি ওর কোরিয়ান বান্ধবী চ্যাই বিন্নাকে নিয়ে আমার বাগান দেখতে আসবে। চ্যাই বিন্না বাবা-মার সঙ্গে বাংলাদেশ ঘুরতে এসেছে। অনেক কিছু দেখে ফেলেছে এর মধ্যে। মফস্বলের মধ্যবিত্ত বাংলাদেশীদের বাগান কেমন হয় তা দেখার ওর খুব শখ। তাই সেঁজুতি ওকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসছে আমাদের এই ছোট্ট মফস্বলে।
পরদিন সেঁজুতি আর বিন্না আসলো। আমি সব গাছ ঘুরে ঘুরে দেখালেও কোনায় পড়ে থাকা নীল অপরাজিতা গাছটা দেখাতে ভুলে গেলাম। বিন্না অপরাজিতা গাছ দেখে হই হই করে উঠল। ‘আরে এ যে দেখছি বাটার ফ্লাই পি! খুবই চমৎকার চা হয় এটা দিয়ে। আর এই ফুল দিয়ে ত্বকের অনেক প্রসাধনীও বানানো যায়। তোমার বাগানের সেরা গাছ এটা!’
আমি তো জানতাম, অপরাজিতা ফুলের সুবাস ছাড়া আর কোনো গুণ নেই। এখন দেখছি এটা দিয়ে চা-ও বানানো যায়। বিন্না আমাকে চা বানানোর রেসিপি বলল—
‘প্যানে ৪ কাপ পানি নিয়ে চুলায় দেবে। ফুটে উঠলে দুটো এলাচ, দুই টুকরো আদা, এক টুকরো দারুচিনি ও পাঁচটি অপরাজিতা ফুল দেবে ওই পানিতে। ফুলের নিচের সবুজ অংশ ফেলে তারপর দেবে। ৫ থেকে ৬ মিনিট ফুটাতে হবে। এরপর চুলা বন্ধ করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখবে। ১৫ মিনিট পর কাপে ঢেলে মধু মিশিয়ে পরিবেশন করতে পারো। চিনি না দেওয়াই ভালো। লেবু মিশিয়ে নিতে পারো খাওয়ার আগে। লেবুর রস মেশালে এই চা রঙ বদলে বেগুনি হয়ে যাবে।’
ওরা চলে যাবার পর অপরাজিতা ফুলের চায়ের উপকারিতা জানতে গুগলে সার্চ করলাম। যা যা পেলাম :
অপরাজিতা ফুলের চা—
Ø চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না
Ø স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
Ø হতাশা দূর করে
Ø ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করে
Ø ক্লান্তি দূর করে
Ø রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
Ø বমিবমি ভাব দূর করে
Ø হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
Ø ক্যান্সার প্রতিরোধক
Ø লিভার সুরক্ষিত রাখে
Ø ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
সিদ্ধান্ত নিলাম, এখন থেকে নিয়মিত অপরাজিতা ফুলের চা খাব। আর বাসায় কোনো মেহমান আসলে তো অবশ্যই অপরাজিতা ফুলের চা খাওয়াব। স্বচ্ছ কাচের কাপে অপরাজিতা ফুলের নীল চা! দুর্দান্ত আপ্যায়ন হবে, তাই না?