চব্বিশের কবি ঘুমিয়ে গিয়েছে মায়ের অধরে।
দুর্বল হাতে তোমাদের ইতিহাস শোনাবো এই আমি;
নির্মল সহজ গদ্য।
দুস্তর পথে দুঃসাহসী দুরন্ত ছাত্রসমাজ
নেমে আসে রাজপথে, নিরস্ত্র মেধা-সৈনিক।
খাকি পোশাকে আবরাহার বাহিনী আসে
ধ্বংস করতে আমাদের স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ।
আমাদের নিরস্ত্র হাতে উঠে আসে নুড়ি
যেন আমরা একেকটি আবাবিল পাখি!
সাঁজোয়া যানে দেখতে পাই আবরাহার একেকটি হাতি।
নীলনদ দেখেছ?
কনস্ট্যান্টিনোপলের ঐতিহাসিক দেয়াল?
কিংবা মাওনা লোয়া আগ্নেয়গিরি?
মুগ্ধের গুলিবিদ্ধ মস্তক চব্বিশের নীলনদ;
ডুবিয়ে দেবে নব্য ফিরআউনের জুলুম-প্রাসাদ।
সাঈদের বুক যেন ঐতিহাসিক দেয়াল;
যেখানে চিত্রিত হবে নওল বিজয় গান।
শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি একেকটি মাওনা লোয়া;
কয়েক দশকের ক্রোধ জমে জমে অগ্নুৎপাতের অপেক্ষায়।
সরকারি ষণ্ডগুলো আঘাত হানে বোনের উপর।
রক্তাক্ত মোটা ফ্রেমের ওপাশে বাজে ইনকিলাবের দুন্দুভি!
বদর দেখেছ?
পিস্তল-রাইফেল হাতে
আবু জাহেল, উতবা, শায়বার বাহিনী;
আর আমরা?
সামান্য লাঠি হাতে সাহসে উদ্ভাসিত শিক্ষার্থী।
তবুও আমাদের ভয়ে কাপুরুষগুলো
দূর থেকে ছিদ্র করে বুক।
একেকটি রাজপথ আজ একেকটি বদরের প্রান্তর
আর আমাদের রক্তাক্ত দেহ স্বাধীনতার লাল বৃত্ত।
ওরা কারার ভয় দেখাতে চায় আমাদের!
ওরা জানে না-
আমরা মালাকুল মাউতকে আপন করে রাজপথে নামি।
ওরা জানে না-
আমরা রক্তের সমুদ্রে লিখে যাই ঝিনুকের ইতিহাস।
ওরা জানে না-
আমাদের একেকটি হৃদয় তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা।
ওরা জানে না-
আমাদের আন্দোলন ফরায়েজী থেকেও অনেক দূর বিস্তৃত।
ওরা জানে না-
আমরা বারেবারে ফিরে আসি তপ্ত লাভা হয়ে;
জালিমের জিন্দান ভেঙে দিই স্লোগানে স্লোগানে।
ওরা আমাদের শহীদ ও গ্রেফতার করে;
তবু আমাদের দৃঢ় হাতে গড়ে ওঠে
চব্বিশের হুদায়বিয়ার সন্ধি;
আশা জাগে আসমান থেকে ঘোষিত হবে—
“ইন্না ফাতাহনা… ”