গত পর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম মিতব্যয়ী হবার প্রয়োজনীয়তা ও উপায় নিয়ে। আশা করি, তোমরা সেটি মনোযোগ দিয়ে পড়েছ এবং আমল করা শুরু করেছ।

আজকের পর্বে আরও দারুণ একটি টিপস নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। 

টিপস ২: স্বল্পমেয়াদী ও বাস্তবসম্মত আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করো

তুমি যদি অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা চাও, তবে অবশ্যই তোমাকে অর্থনৈতিকভাবে সচেতন থাকতে হবে। এজন্য স্বল্পমেয়াদি আর্থিক লক্ষ্য তৈরি করো। লক্ষ্যগুলো অবশ্যই বাস্তবসম্মত এবং অর্জনযোগ্য হতে হবে। যদি তা না হয়, তবে তুমি লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে না। আগেই হতাশ হয়ে ছিটকে পড়বে। 

যদিও তুমি এখনো ছাত্র, তবুও তোমার টিউশনি বা পার্ট-টাইম কাজের মতো হালাল উপার্জন নিয়েই এই লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করো। এর মাধ্যমে একসময় তোমার মনের কোণে জমিয়ে রাখা দামি ইচ্ছেগুলো পূরণ করতে পারবে, ইনশাআল্লাহ।

তোমার স্বল্পমেয়াদি আর্থিক লক্ষ্য দু’টি ক্যাটাগরিতে করতে পারো। একটি মাসিক লক্ষ্য, আরেকটি বার্ষিক। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে কী কী বিষয় থাকতে পারে, তা নিচে দেওয়া হলো:

মাসিক লক্ষ্য

● নিয়মিত সঞ্চয়ের জন্য ৫০০ টাকা রাখো।

● একটি উপকারী বই কেনার জন্য ২০০ টাকা রাখো।

● সাদাকাহ করার জন্য ২০০ টাকা রাখো।

● পরিবারে ২০০ টাকার বাজার করে দেবে।

বার্ষিক লক্ষ্য

● নিয়মিত সঞ্চয়ে ৬,০০০ টাকা জমাবে।

● ১২০০ টাকার উপকারী বই কিনবে।

● ২৪০০ টাকা সাদাকাহ করবে।

● পরিবারে ২৪০০ টাকার বাজার করে দেবে।

● যারা গ্রামে থাকো তারা প্যাসিভ ইনকামের জন্য একটি ছাগল কিনবে। শহরে ছাগল পালন সম্ভব না হলে কোনো হালাল ও নির্ভরযোগ্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারো।

● আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি দেখে রোমাঞ্চিত হবার জন্য একটি ট্যুর দেবে।  

● দুই ঈদে পরিবারের সদস্যদের গিফটের জন্য ৫,০০০ টাকা বরাদ্দ রাখবে।

অপচয় করা থেকে বিরত থাকবে। অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা যেমন- দামি খাবার, ব্র্যান্ডের পোশাক, বা অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা এড়িয়ে চলবে। আল্লাহর দেওয়া রিযিকের জন্য বেশি বেশি কৃতজ্ঞতা আদায় করবে। তাহলে আল্লাহ তোমার রিযিক আরও বাড়িয়ে দেবেন। এটা আল্লাহর ওয়াদা।

তোমার লক্ষ্যগুলো হুবহু এটাই হতে হবে এমন না। এটি একটি নমুনা কেবল। তুমি তোমার হালাল উপার্জনের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে লক্ষ্য নির্ধারণ করো। তিন মাস পরপর তালিকাটি চেক দাও। কী কী অর্জন করতে পেরেছ, আর কী কী পারোনি, তা দেখো। যেগুলো অর্জন করতে পারোনি, সেগুলোর জন্য বিশেষ এফোর্ট দাও।

এভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিলে, মাস/বছর শেষে তুমি অনেক কিছু অর্জন করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। আর লক্ষ্য নির্ধারণ না করলে এর অর্ধেকও হয়তো অর্জন করতে পারবে না।

(চলবে ইনশাআল্লাহ)